বাইকের কাগজপত্র হারিয়ে গেলে করণীয়

Other
বাইকের কাগজপত্র হারিয়ে গেলে করণীয়: আমাদের নিজেদের অসতর্কতার জন্য মাঝে মধ্যে গাড়ির কাগজপত্র হারিয়ে ফেলি। এক্ষেত্রে নতুন কাগজ করার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। ধাপগুলো নিন্মরূপ:

প্রথমতঃ
জিডি করতে হবে কাগজ হারিয়ে গেলে প্রথমেই আপনাকে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করতে হবে। সংশ্লিষ্ট থানা বলতে আপনি যে থানা এলাকায় আপনার কাগজপত্র হারিয়েছেন সে থানায়-ই জিডি বা সাধারণ ডাইরি করতে হবে। জিডি করার সময় কোনোপ্রকার টাকা পয়সা দরকার হবে না। জিডি করার সময় আপনার যে ডকুমেন্টস টি হারিয়েছে তার সম্পর্কে জানা সব তথ্যই জিডিতে উল্লেখ করবেন। যেমনঃ বাইকের কাগজপত্র হারিয়ে গেলে বাইকের নাম্বার, ইঞ্জিন নাম্বার, চ্যাসিস নাম্বার, কি নামে গাড়ি আছে ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ করতে হবে।

দ্বিতীয়তঃ
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জিডি করার পরে আপনাকে ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে। ক্লিয়ারেন্স এর জন্য  ডিএমপির আটটি ডিভিশনের যে কোনো একটি ডিভিশনে জিডি কপিসহ হাজির হলেই ক্লিয়ারেন্স পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজেরই যেতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই, প্রতিনিধি পাঠালেও চলবে। অফিসে গেলে আপনার গাড়ির বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না তা অনলাইন এ চেক করে দেখা হবে, যদি কোনো মামলা থেকে থাকে তবে তা অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে এবং তারপর ক্লিয়ারেন্স পাবেন। ক্লিয়ারেন্স সিল পেয়ে গেলে আপনার এ ধাপের কাজ শেষ। ডিএমপিতে ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার জন্য আটটি অফিসের ঠিকানাঃ
  • ট্রাফিক রমনা অফিস(পুরাতন দক্ষিণ): ১০ সার্কিট হাউস রোড(শান্তিনগর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের গলি), রমনা, ঢাকা-১০০০
  • ট্রাফিক মতিঝিল অফিস(পুরাতন পূর্ব): ৬ নং পুরানা পল্টন(কস্তুরি হোটেলের গলি), ঢাকা-১০০০
  • ট্রাফিক উত্তরা অফিস(পুরাতন উত্তর): বাড়ি-৮, রোড ২১(লা মেরিডিয়ান হোটেলের পেছনে)নিকুঞ্জ -২, খিলক্ষেত, ঢাকা
  • ট্রাফিক তেজগাঁও অফিস(পুরাতন পশ্চিম): ৮/৩ আওরঙ্গজেব রোড(প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের উল্টো পার্শ্বে, মোহাম্মদপুর পুরাতন থানা), মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
  •  ট্রাফিক গুলশান অফিস: হাউজ নং-১০, রোড নং-২ই, বারিধারা জে-ব্লক,(আমেরিকান এম্বাসির উল্টো পার্শ্বে) ঢাকা-১২১২
  • ট্রাফিক ওয়ারী অফিস: ৩/১ হাটখোলা রোড,(সালাউদ্দিন হাসপাতালের পার্শ্বে; পুরাতন ওয়ারী থানা অফিস) ওয়ারী, ঢাকা-১২০৩
  • ট্রাফিক লালবাগ অফিস: ১৭৪/এ নিউ পল্টন(কবর স্থানের পশ্চিম পার্শ্বের রাস্তা সংলগ্ন, বিডিআর ৩নং গেইট এর ১০০ গজ দক্ষিণে), আজিমপুর, ঢাকা।
  • ট্রাফিক মিরপুর অফিস: বাড়ি-১/২/বি(ইনডোর স্টেডিয়ামের উল্টো পার্শ্বে), লেন-১৪, ব্লক-এ, সেকশন-১০, মিরপুর, ঢাকা

তৃতীয়তঃ
বিআরটিএ তে ফি জমা সর্বশেষ ধাপটি হলো বিআরটিএ অফিসে গিয়ে জিডি কপি ও আপনার আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত এডির অফিসে গেলেই টাকা জমার পরিমাণ বলে দিবে এবং সে অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে। সর্বশেষ আবার বিআরটিএর অফিসে আসলে একটি প্রাপ্তি রসিদ দিবে।

চতুর্থতঃ
বিআরটিএ অফিসের কার্যক্রম শেষ করার পরে প্রাপ্তি রসিদসহ কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা অফিস থেকেই বলে দিবে সে অনুযায়ী না পেলে অর্থাৎ নির্ধারিত তারিখে কাগজ না পেলে পুনঃরায় গিয়ে সময় বাড়িয়ে নিতে হবে। এই তারিখ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণেও মামলা হতে পারে।
পঞ্চমতঃ
প্রাপ্তি নির্ধারিত সময়ের পরে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে বিআরটি এ থেকে আপনার কাগজপত্র তৈরী হয়েছে মর্মে জানিয়ে দেয়ার পরে অফিসে গিয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসতে হবে।
মনে রাখবেন:
জিডি গাড়ির কোনো বৈধ ডকুমেন্টস নয়। এক্ষেত্রে জিডি মানে আপনার ডকুমেন্টস হারিয়ে যাওয়ার কথা অফিসিয়ালি আপনি পুলিশ কে অবহিত করলেন বা জানালেন। জিডি কপি নিয়ে গাড়ি চালানো বৈধ নয়, তাই সার্জেন্ট জিডি কপি থাকার পরেও মামলা দিতে পারবেন। এমন কোনো আইন বাংলাদেশে নেই যে, আপনি গাড়ির কাগজপত্র হিসেবে জিডি কপি দিয়ে এতোটা সময় গাড়ি চালাতে পারবেন। বাইকারদের অনেকের মনেই একটা ভুল ধারণা আছে জিডি কপি দিয়ে ১ সপ্তাহ গাড়ি চালানো বৈধ, এমন ধারনার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই, তবে মানবিকতা ভিন্ন বিষয়।
Tagged